নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহীদ হোছাইন চৌধুরী (৭৫) মারা গেছেন করোনা উপসর্গ নিয়ে। কিন্তু করোনা বিধি না মেনে পর পর দুই দফা জানাজার আয়োজন শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রথম জানাজা আজ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে কয়েক শ মানুষ উপস্থিত হলেও দ্বিতীয় জানাজায় লোকের উপস্থিতি ছিল হাজারের বেশি। পরের জানাজাটি অনুষ্ঠিত হয় নিজের গ্রামের ইদ্রিস মিয়া মসজিদ প্রাঙ্গণে।
এদিকে শহীদ হোছাইন চৌধুরী করোনা উপসর্গে মারা যাওয়ার বিষয়টি এলাকায় প্রচার হলে অনেকের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ জানাজায় অংশ নিয়েছেন তারাও। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল এবং স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, অন্যান্য রোগের পাশাপাশি কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে শহীদ হোছাইন চৌধুরীকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রিলিজ করার সময় দেওয়া ছাড়পত্রেও উল্লেখ করেছেন, তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। অতএব করোনা বিধি মেনেই জানাজাসহ দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু স্বজনেরা করোনা উপসর্গের বিষয়টি গোপন করে আগে থেকে ফেসবুকে ঘোষণা দেন পর পর দুই স্থানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
সেই মোতাবেক ২২ মে, শুক্রবার সকাল ৭টায় এবং ১১টায় পর পর দুই দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে পারিবারিক মসজিদের কবরস্থানে দাফন করা হয়। অপরদিকে মরহুমের স্ত্রী খাইরুন্নেছাও একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে প্রথমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ও পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে করোনা সচেতন একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘দিন দিন চকরিয়াতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ শুক্রবারও একসঙ্গে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সেই হিসেবে আজ পর্যন্ত ১০৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।’
তারা আরো বলেন, ‘কৈয়ারবিলের শহীদ হোছাইন চৌধুরী যেহেতু করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন, সেহেতু তাঁর জানাজা এবং দাফন-কাফনে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মাঝে করোনা ছড়ায়নি সেটা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে না। তাই সবার উচিত হবে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা এবং করোনা পরীক্ষা করে নিজে এবং পরিবারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখা। না হয় ভয়াবহ পরিণতির দিকেই যাবে চকরিয়ায় করোনা পরিস্থিতি।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে ওই ব্যক্তি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে স্বজনদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, একেবারে সীমিত পরিসরে একটি জানাজার ব্যবস্থা করে দ্রুত দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। এখন যেহেতু দুটি জানাজা হয়ে গেছে, সেহেতু যারা অংশগ্রহণ করেছেন তারা যাতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন এবং প্রত্যেকে করোনা পরীক্ষা করান সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: